স্মার্টফোনের কল্যাণে আক্ষরিক অর্থেই হাতের মুঠোয় এসেছে, পুরো দুনিয়াটা। মুহূর্তের মধ্য যে কোন তথ্য জানা যায় হাতে একটা স্মার্টফোন থাকলেই। কিন্তু আলোর অন্যপাশে যেমন অন্ধকার থাকে, তেমনি এখানেও আছে। স্মার্টফোন সুবিধার কথা বলে শেষ করা গেলে সমস্যাগুলো বলে শেষ করার মতো নয়। মাত্রা অতিরিক্ত আসক্তি, মনোযোগ কেড়ে নেওয়া বা স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেওয়া স্মার্টফোনের নেগেটিভ সাইডগুলোর মধ্য অন্যতম। এসব সমস্যার সমাধানই দিচ্ছে মিনিমালিস্ট ফোন।

মিনিমালিস্ট ফোন আসলে কী

স্মার্টফোনের দরকারি ফিচারগুলো রেখে আসক্তির সবকিছুক দূর করে যে ফোন তৈরি করা হয়েছে তাকেই বলা হচ্ছে মিনিমালিস্ট ফোন। ফিচার ফোন থেকে এর ভিন্নতা হচ্ছে, এতে বেশিভাগক্ষেত্রেই থাকে টাচ স্ক্রিন। দরকারি অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ। অন্যদিকে স্মার্টফোনের মতো ভুরি ভুরি অ্যাপ কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সুযোগ নেই বললেই চলে মিনিমালিস্ট ফোনে।

মিনিমালিস্ট ফোন

স্মার্টফোন ও মিনিমালিস্ট ফোন

২০০৭ সালে প্রথম আইফোন বাজারে আসে। এর সাথে সাথেই মূলত আজকের স্মার্টফোনের যাত্রা শুরু হয়। ফোনে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে মানুষের। যারা কিছুটা সতেচন মানুষ তাঁরা অনেকের কাছেই হয়ত মনে হয়, আগেই সেই কথা বলার ফোনগুলোই ভালো ছিলো। অনেকে ব্যবহারও করেন ফিচার ফোন। তবে, তাতে স্মার্টফোনের স্বাদ একদমই পাওয়া যায় না।

আমার মতো অনেকের কাছেই স্মার্টফোনের সবকিছু ছাড়তে পারলেও, গুগল ম্যাপ বা ইমেইলের মতো সেবা সবসময় প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে সমাধান হতে পারে মিনিমালিস্ট ফোন।

প্রশ্ন করতে পারেন, স্মার্টফোন আসক্তির জন্য কি শুধু স্মার্টফোনই দায়ী? এই সমস্যা সমাধানে স্মার্টফোন ছাড়াটাই কি একমাত্র সমাধান? উত্তর হচ্ছে, না। স্মার্টফোনের সমস্যার জন্য শুধু স্মার্টফোন নয়। বরং এর ব্যবহারকারীই বেশি অংশে দায়ী। এজন্য সমাধান, একেক জনের ক্ষেত্রে একেকরকম।

অনেকেই নিয়ন্ত্রিত ভাবে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারেন। বাজে সময় নষ্ট করেন না। তবে, স্মার্টফোনের অ্যাপ বা স্যোশাল মিডিয়ার লক্ষ্যই যখন থাকে আপনাকে বেশি সময় ফোনে ধরে রাখা তখন যাঁদের শক্তিশালী সেলফ কন্ট্রোল বা আত্মনিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা আছে, তাঁদের মিনিমালিস্ট ফোনের দরকার নেই বা স্মার্টফোন ছাড়ার দরকার নেই। কিন্তু যাঁদের আত্মনিয়ন্ত্রন ক্ষমতা কম, তাঁদের জন্য এটা দারুন একটা সমাধান।

আরও পড়তে পারেনঃ স্যোশাল মিডিয়া অ্যালগরিদম : যা আপনাকে আসক্ত করে তোলে

মিনিমালিস্ট ফোন কিন্তু কোন ব্রান্ড বা ফোনের মডেলের নাম নয়। বরং ফিচার ফোন বা স্মার্টফোনের মতো ফোনের একটি ধরণ এটা। ফিচার ফোন থেকে একটু বেশি আবার স্মার্টফোন থেকে অনেকটুকুই কম।

মিনিমালিস্ট ফোন কোথায় পাওয়া যাবে?

বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের নানা মডেলের মিনিমালিস্ট ফোন আছে। এর মধ্য দ্য লাইটফোনের নামটা সবার আগে উল্লেখ করা যেতে পারে। এর ডিসপ্লে তৈরি করা হয়েছে ই-ইংক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ফলে খুব কম চার্জ ব্যবহার করে ফোনটি। ফোন, অ্যালার্ম, ক্যালকুলেটর, ম্যাপ, বা অডিও শোনার মতো সাধারণ কিছু সুবিধা এতে দেওয়া আছে। সাদাকালো ডিসপ্লের মাঝে চমৎকার ইনটারফেস, দারুন এক মিনিমাল ভাইব তৈরি করে।

বাংলাদেশের বাজারি ফোনটি অশিয়ালি পাওয়া যায় কিনা সে তথ্য আমরা পাই নি। আন অফিশিয়ালি অনেকে আনতে পারে। রাজধানীর ফোনের দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।

লাইটফোন ছাড়াও নকিয়ার কাই ওএস চালিত ফোনগুলোও মিনিমালিস্ট ফোনের মধ্য পড়ে। দাম ৪-৮ হাজার টাকার মধ্য। এছাড়া কাই ওএস চালিত আরও কিছু ফোন আছে বাজারে। নিকটস্থ দোকানে খোঁজ নিতে পারেন। কাইওএস চালিত এসব ফোন দেখতে ফিচার ফোনের মতো হলেও এগুলোতে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করা যায়। দেখা যায় ইউটিউব, হোয়াটস অ্যাপ চালানোর সুযোগও রয়েছে। স্মার্টফোনের আসক্তি এড়াতে, চাইলে এসব ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2023 © KendroBangla | All Rights Reserved