সব প্রাণীই কি স্বপ্ন দেখে? এবং অন্যান্য

প্রাণি দেখে সবচেয়ে জটিল অঙ্গটি হচ্ছে মস্তিস্ক। বুদ্ধিমান প্রানি হিসেবে মানুষের মস্তিষ্ক তুলনামূলক ভাবে আরও বেশি জটিল। মস্তিষ্ক কীভাবে ঠিক কীভাবে কাজ করে তা যেমন বিজ্ঞানীদের এখনও প্রায় অজানা, তেমনি কাছে স্বপ্ন ব্যাপারটি এখনও পরিষ্কার না। কেন আমরা স্বপ্ন দেখি, কীভাবে দেখি তা রহস্যই বটে। এর পরও বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করেছেন অন্যান্য প্রাণিরা স্বপ্ন দেখে কিনা সেটা সম্পর্কে।

প্রচলিত একটা ধারণা আছে কাক, দোয়েলের মতো কিছু পাখি নাকি চকচকে যে কোন বস্তু সংগ্রহ করে। হোক সেটা সোনা, রূপার গহনা অথবা টিনের টুকরা। সেটা সে সংগ্রহ করে নিয়ে নিজের বাসায় গোপনে সংরক্ষণ করে। আসলেই কি এমন ধারণার ভিত্তি আছে? নাকি মনগড়া গল্প?

মাকশড়া দেখলে ভয় পায় এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে কম নয়। লিকলিকে আটটা পায়ের উপর বসা ছোট্ট এই প্রাণি যথেষ্টই ভীতিকর। কিছু কিছু মাকড়শা তো মারাত্মক বিষাক্ত। পোকামাকড় সাধারণত মাকড়শার সঙ্গ এড়িয়ে চলতে চায়। এর কারণ অবশ্য মাকড়শার জাল। যেটা মাকড়শার জন্য খাবার সংগ্রহের একটি উপকরণ হলে পোকামাকড়ের জন্য মৃত্যুর কারণ।

সব প্রাণিই কী স্বপ্ন দেখে?

মাকড়শার জালে কোন পোকামাকড় পড়লে তাৎক্ষনিকভাবে তাতে আটকা পড়ে। কোনভাবে মুক্তি মেলে না। তবে, পোকা মাকড় আটকে গেলেও মাকড়শা নিজে কিন্তু তাঁর জালে আটকা পড়ে না। কেন? প্রাণিদের সম্পর্কে এই চমৎকার তিনটি প্রশ্নের উত্তরই জানবো আমরা আজকের লেখায়। আজ দেরী না উত্তরে চলে যাই।

সব প্রাণিই কি স্বপ্ন দেখে?

সব প্রাণি ঘুমায়। তবে, আসলে সব প্রাণি আসলে স্বপ্ন দেখে না। মানুষ ঘুমানোর পর যখন স্বপ্ন দেখে তখন বাইরে থেকে ব্যাপারটি বোঝা যায়। কারণ, স্বপ্ন দেখার সময় মানুষের চোখের পাতা কাঁপতে থাকে। ইংরেজিতে যেটাকে রাপিড আই মুভমেন্ট বা রেম (REM) বলে।

এছাড়া, স্বপ্ন দেখার সময় আমাদের ব্রেনের অ্যাক্টিভিটিও পরিবর্তন হয়ে যায়। গভীর ঘুমের সময় যে ব্রেন যতোটা ধীর গতিতে চলে তার থেকে স্বপ্ন দেখার সময় অনেক দ্রুত গতিতে চলে। অনেকটা জেগে থাকলে ব্রেন যে গতিতে চলে সেরকম গতিতে।

বিজ্ঞানীরা অন্যান্য প্রাণির ক্ষেত্রে ঘুমের সময় উপরের বিষয় দুইটি ঘটে কিনা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন। তাতে জানতে পেরেছেন, স্তপ্যাপায়ী প্রাণি এবং পাখিরা স্বপ্ন দেখে থাকে। তবে, মাছ এবং পোকামাড়ক কোনভাবেই স্বপ্ন দেখে না বলেই তাদের ধারণা।

আরও পড়তে পারেনঃ ইউটিউব সম্পর্কিত ১০টি অবাক করা তথ্য, আপনি জানেন কি?

কাক কিংবা দোয়েল কি সত্যিই চকচকে জিনিস সংগ্রহ করে?

পূর্ণ বয়ষ্ক কাক অথবা দোয়েল আসলে কখনোই খাবার বাদে অন্য কোনকিছু সংগ্রহ বা সংরক্ষণ করে না। তবে, তরুণ বা অল্পবয়সী কাক কৌতুহল বশত চকচকে ধরণের কোন বস্তু সংগ্রহ বা সংক্ষণ করে মাঝে মাঝে। কখনও বা লুকিয়েও রাখে।

কৌতুহল ছাড়াও এসব জিনিস অল্পবয়সী কাকের চোখে অনেকসময় আকর্ষণীয় লাগে বলে অনেকে মনে করেন। এখান থেকেই আসলে কাক বা দোয়েলের প্রতি এমন ধারণার জন্ম হয়েছে। আসলে এর পিছনে গভীর কোন রহস্য লুকিয়ে নেই।

মাকড়শা কেন তার নিজের জালে পড়ে না?

মাকড়শার শরীর থেকে নিঃসৃত বিশেষ একধরণের তেল এবং পায়ে থাকা খুবই ক্ষুদ্র লোমগুলো মূলত, মাকড়শাকে নিজের জালে আটকে পড়া থেকে অনেকটাই বিরত রাখে। তবে, এটাই একমাত্র কারণ নয়।

মাকড়শার জাল এমনভাবে তৈরী করা হয়, যাতে করে এর উপর দিয়ে ধীরে ধীরে চলাচল করলে আটকে যাওয়ার খুব বেশি সম্ভাবনা থাকে না। তবে এটা ভেদ করার চেষ্টা করলে আটকে যেতেই হবে। মকড়শার জাল মূলত তৈরী করা হয়, দ্রুতগামী উড়ন্ত পতঙ্গকে আটকে ফেলার জন্য।

আরও পড়তে পারেনঃ মোবাইল ফোন নিয়ে ২০টি চমকপ্রদ তথ্য, আপনার জানা আছে কি?

চমৎকার তিনটি প্রশ্ন নিয়ে এই ছিলো আমাদের আজকের আয়োজন। প্রশ্নের উত্তরগুলো ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্রান্ত খুজে বের করা। তাই, তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে আমরা শতভাগ নিশ্চিত নই। কৌতুহল নিবৃত্তির উদ্দেশ্যেই আমাদের এই প্রচেষ্টা। আপনার কাছে কোন উত্তর অসংগত মনে হলে অনুগ্রহপূর্বক কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে ভুলবেন না। পাশাপাশি এধরণের লেখা আপনাদের কাছে কেমন লাগছে সেটাও আমাদের জানাবেন।

শেয়ার করে নিনঃ

Leave a Reply

This Post Has One Comment