অনলাইনে বা কম্পিউটারে ডকুমেন্ট ফাইল ফরম্যাটগুলোর মধ্য পিডিএফ (PDF) অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর প্রধান কারণ পিডিএফ ফাইলের স্ট্যাবিলিটি এবং রিডঅ্যাবিলিটি। অর্থাৎ এতে যেমন ডকুমেন্ট অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষণ করা যায়, তেমনি সবধরণের স্মার্ট ডিভাইসেই এটা খুব সহজে পড়া যায়।

এতোদূর পর্যন্ত পড়ে যদি আপনার কছে সবকিছু এলোমেলো লাগে, তাহলে অনুরোধ করবো আমাদের সাথে লেখার শেষ পর্যন্ত থাকতে। এই লেখায় আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করবো পিডিএফ কী; কী কাজে এটা ব্যবহৃত হয়; কীভাবে পিডিএফ ফাইল তৈরী করা যায়; এবং কীভাবে ওপেন করা যায়।

পিডিএফ ফাইল কী এবং এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত

পিডিএফ ফাইল কী

চলুন পাঠক, আর দেরী না করে পিডিএফ ফাইল নিয়ে আজকের আলোচনা শুরু করি।

পিডিএফ ফাইলের পরিচয়

বিখ্যাত সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডোবি কর্তৃক ডেভেলপ করা একটি ডিজিটাল ডকুমেন্ট ফাইল ফরম্যাট হচ্ছে, পিডিএফ (PDF)। এর পূর্ণরূপ, পোর্টেবল ডকুমেন্ট ফরম্যাট। এটি টেক্সট এবং ইমেজের পাশাপাশি বাটন, হাইপার লিংক, এমবেডেড ফন্ট, ভিডিও সহ আরও নানা কিছু সংযুক্ত করার সুবিধা দেয়। ফলে ডকুমেন্ট হয় আরও প্রাণবন্ত।

এমবেডেড ফন্ট সাপোর্ট করার ফলে পিডিএফ ডকুমেন্টে লেখা এবং ফন্ট উভয়ই থাকে অবিকৃত। যে সুবিধাটি অন্যান্য ডকুমেন্ট ফাইলে সাধারণত পাওয়া যায় না। এছাড়া, ওয়ার্ড কিংবা টেক্সট ফাইলের মতো সহজে পিডিএফ এডিট করা যায় না। তাই, এতে তথ্য পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও বেশ কম।

পিডিএফ ফাইলের আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে, এটা অপারেটিং সিস্টেম নির্ভর কোন ফাইল নয়। ওয়ার্ড ফাইলের ক্ষেত্রে যেটা দেখা যায়, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে তৈরী করা একটি ফাইল ওপেন অফিস কিংবা গুগল ডকে ওপেন করলে সেটার ফন্ট এবং ফরম্যাট এলোমেলো হয়ে যায়।

পিডিএফ এ সেরকম কোন সমস্যা নেই। আপনি যে ডিভাইস থেকেই পিডিএফ তৈরী করেন না কেন, সব ডিভাইসেই সেটা একই রকম দেখাবে। অনেকটা JPG কিংবা PNG এর মতো ফটো ফাইলের মতো। কিন্তু ফটো ফাইলের চেয়ে হাজাগুণ বেশি সুবিধা সম্পন্ন।

এটা কী কাজে ব্যবহৃত হয়?

প্রোডাক্ট ম্যানুয়াল, ই-বুক, চাকরির আবেদন পত্র, সিভি, ফ্ল্যায়ার, স্ক্যান করা ডকুমেন্ট এরকম আরও নানা কাজে পিডিএফ ব্যবহৃত হয়। পিডিএফ যেহেতু সব ডিভাইসে একই রকম দেখা যায়; তাই যে কোন ধরণের ডকুমেন্ট এডিটের কাজ শেষ করে পিডিএফ এ রূপান্তরিত করতে পারেন।

যে কোন ডিভাইসে একই রকম দেখা যাওয়ার পাশাপাশি আপনি সরাসরি সেই পিডিএফ ফাইলটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন যে কোন জায়গা থেকে।

পিডিএফ ফাইল পড়া যায় সব ডিভাইসে

কীভাবে পিডিএফ ফাইল তৈরী করবেন?

সাধারণ একটি পিডিএফ ফাইল তৈরী করতে বিশেষ কোন সফটওয়্যারে প্রয়োজন নেই। যে কোন ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যারে (মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, লিবরা অফিস, গুগল ডকস ইত্যাদি।) কোন ডকুমেন্ট লিখেই সেটাকে পিডিএফ আকারে সেভ করে নিতে পারবেন। এজন্য ডকুমেন্ট লেখা শেষে Ctrl+Shift+S চেপে ধরে পিডিএফ ফরম্যাটে সেভ করে নিতে হবে শুধু।

ডকুমেন্ট ছাড়াও এক বা একাধিক ছবি থেকেও পিডিএফ ফাইল তৈরী করতে পারবেন। এজন্য অনলাইনের দারুণ সব ফ্রী টুলস রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর স্ক্যান করা কোন ফাইল পিডিএফ করার জন্য স্মার্টফোনে এবং কম্পিউটারে স্ক্যানার সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

পিডিএফ ফাইল তৈরী করতে কোন সুবিধা হলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। পরবর্তীতে আমরা এ নিয়ে একটা বিস্তারিত টিউটোরিয়াল লিখবো, ইনশাআল্লাহ্‌।

কীভাবে পিডিএফ ফাইল ওপেন করবেন?

পিডিএফ তৈরী করা লাগুক বা না লাগুক বর্তমান সময়ে এটা ওপেন করার প্রয়োজন প্রায় সবারই পড়ে। ক্লাসের নোট, অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা কোন ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা কোন ইবুক; এসবের বেশিরভাগই থাকে পিডিএফ আকারে।

যাইহোক, পিডিএফ ফাইল ওপেন করাও একারণে এখন দারুণ সহজ। আপনি যদি কম্পিউটার ব্যবহার কারী হম, তাহলে যে কোন ব্রাউজারেই আপনি পিডিএফ ওপেন করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে শুধু ব্রাউজারটি ওপেন করে পিডিএফ ফাইলটি মাউস দিয়ে ধরে এনে ব্রাউজারের মাঝে ছেড়ে দিতে হবে।

তবে, পিডিএফ পড়ার জন্য অনেক ফ্রী সফটওয়্যার রয়েছে। চাইলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। আমার ব্যক্তিগতভাবে প্রিয় একটা পিডিএফ রিডার হচ্ছে, ফোক্সিটরিডার

স্মার্টফোনে অবশ্য ব্রাউজারে পিডিএফ ওপেন করার সুযোগ নেই এখন পর্যন্ত। তবে, ফোনে গুগল ড্রাইভের আপডেট ভার্সন ইন্সটল করা থাকলে এমনিতেই ওপেন করতে পারবেন। না থাকলে প্লে স্টোর থেকে গুগল ড্রাইভ অথবা কোন একটি পিডিএফ রিডার ইন্সটল করে নিতে হবে। তাহলে কাঙ্খিত পিডিএফ ফাইলটিতে ক্লিক করার মাধ্যমে আপনি সেটা ওপেন করতে পারবেন।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2023 © KendroBangla | All Rights Reserved