আটপায়ে ছোট্ট একটা প্রাণি মাকড়শা। কিছু প্রজাতি বাদ দিলে প্রায় সব মাকড়শাই নিরীহ এবং ভিতু প্রকৃতির প্রাণি। তবে, নিরীহ এই প্রাণিকে ভয় পাওয়া মানুষের সংখ্যা কিন্তু একদম কম নয়। কেন মানুষ মাকড়শাকে ভয় পায়? সেই প্রশ্নের উত্তর থাকছে আজকের লেখায়।
এছাড়াও সাথে থাকছে পেঙ্গুইন কেন শুধুমাত্র এন্টার্টিকা মহাদেশেই থাকে এবং জেলীফীশ কীভাবে ব্রেইন ছাড়া বেঁচে থাকে সেই দুইটি প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর। আশাকরছি, আপনাদের ভালো লাগবে।
একটু জানুন এই বিভাগে প্রকাশিত লেখায় আমরা চেষ্টা করি, সহজে সংক্ষেপে আমাদের মনে যে প্রশ্নগুলো আসে সেগুলো উত্তর খুঁজে বের করতে। আপনার মনে থাকা কোন প্রশ্ন তাই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবো পরবর্তী কোন একটি লেখায়।
মানুষ মাকড়শাকে ভয় পায় যে কারণে ও অন্যান্য

কেন মানুষ মাকড়শাকে ভয় পায়?
মাকড়শাকে ভয় পাওয়ার পিছনে আসলে অনেক কারণ থাকতে পারে। উইকিপেডিয়ার একটি তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৬ শতাংশ মানুষ মাকড়শাকে ভয় পায়। তাই, তো এই ভয়ের একটা খটমটে নামও রয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানে। যেটা হচ্ছে, অ্যারাকনোফোবিয়া।
যাইহোক, মানুষের এই মাকড়শা ভীতি অনেকাংশেই জীনগত। প্রাচীনকালে গুহায় বসবাস জীবন রক্ষার প্রয়োজনেই মানুষকে বিপদজনক প্রাণীকে চিনে রাখতে হতো। মাকড়শা দেখতে ভয়ংকর এবং এর কিছু প্রজাতি প্রচন্ড বিষাক্ত।
তাই, মাকড়শার কামড়ে কেউ মারা গেলে তখন থেকেই অন্যান্য গুহাবাসী মানুষের মনে বিপদজনক প্রাণি হিসেবে মাকড়শা ভয় পাওয়ার প্রবণতা তৈরী হয়। সেখান থেকে মাকড়শা ভীতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম জিনগতভাবে মানুষের মাঝে চলে এসেছে।
আরও পড়তে পারেনঃ অভ্যাস ত্যাগ করতে কতোটা সময় লাগে? বিজ্ঞানীরা যা বলেন
এছাড়া আমাদের বাড়িঘর সব জায়গাতেই মাকড়শার দেখা মেলে। অনেকের ছোটবেলাতে মাকড়শা নিয়ে ভয়ংকর কোন ঘটনা ঘটলে; সেটা মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে গেঁথে যায়। যার ফলে, বড় হলেও সেই ভীতিটা কাটে না।
এসব কারণেই মূলত মানুষ মাকড়শাকে ভয় পায়। তবে, আমাদের আশেপাশে যেসব মাকড়শা দেখা যায়, সেগুলো ভয় পাওয়ার যৌক্তিক কোন কারণ আসলে নেই। কারণ, এগুলো মারাত্মক নয়। তবে, সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে যে কোন পোকামাকড় থেকে সাবধান থাকাটা সব সময়ের জন্যই ভালো।
কেন পেঙ্গুইন শুধুমাত্র দক্ষিণ গোলার্ধেই দেখা যায়?
পেঙ্গুইনের আবাসস্থল অ্যান্টার্টিকা মহাদেশ। উড়তে অক্ষম এই পাখিটি সাতারে বেশ পারদর্শী হলেও, তীরের কাছাকাছি থাকতেই বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাছাড়া, দক্ষিণ গোলার্ধ পার হতে হলে নানারকম শিকারী প্রাণির দেখা তো মিলবেই, থাকবে উষ্ণ পানির বিস্তৃর্ণ এলাকা। যা তাদের জন্য পার হওয়া বিপদজকন এবং অসম্ভব।
উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরু উভয় জায়গা বরফ আচ্ছাদ্দিত হলেও, জীব বৈচিত্র্যে আছে ভিন্নতা। দক্ষিণ মেরুর প্রধান বাসিন্দা যেমন পেঙ্গুইন, উত্তরমেরুতে তেমনি মেরু ভাল্লুক এবং আর্কটিক শেয়ালের মতো শিকারী প্রাণির বিচরণ রয়েছে।
আরও পড়তে পারেনঃ কম্পিউটার নিয়ে বিস্ময়কর অথচ সত্য ১৫টি তথ্য!
সবমিলিয়ে পেঙ্গুইনরা পরিযায়ী পাখির মতো আবাস্থল ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার আসলে কোন কারণ নেই। তাই তো ৪০ মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে একই এলাকায় রয়েছে পেঙ্গুইনরা।
জেলীফীশ ব্রেইন ছাড়াই যেভাবে বেঁচে থাকতে পারে
ব্রেইন প্রাণিকে পরিবেশ সম্পর্কে জানতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রাণিকে টিকিয়ে রাখে। বেঁচে থাকার জন্য প্রাণির প্রায় আবশ্যিক একটা অঙ্গ এটা। তবে, সমুদ্রের জেলীফীশ, ব্রেন ছাড়াই দিব্যি প্রজন্মের পর প্রজন্ম টিকে আছে।
এর কারণ ব্রেন না থাকলেও জেলীফীশের দেহজুড়ে রয়েছে নিউরণ বা স্নায়ুকোষ। যেটা মূলত মৌলিক প্রয়োজনগুলো পূরণের জন্য সক্রিয় থাকে। যার ফলে, খাওয়াদাওয়া, নড়াচড়া বা বংশবৃদ্ধি ইত্যাদি সময় মতো করার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যাঙ্গগুলো কাজ করে। অনেকটা অটোপাইলট মোডের মতো।
আশাকরি, বুঝতে পেরেছেন, কেন মানুষ মাকড়শা ভয় পাইয়, পেঙ্গুইনই বা কেন শুধুমাত্র দক্ষিণ গোলার্ধে থাকে বা জেলীফিশের ব্রেইন ছাড়া বেঁচে থাকার রহস্য। লেখাটি সম্পর্কে আপনার ভালো লাগা মন্দলাগা আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন। আপনার কমেন্ট আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে ভালো এবং মানসম্মত লেখা উপহার দিতে।