পৃথিবী সবচেয়ে কাছের যে গ্রহটিতে মানুষের সুযোগ রয়েছে সেটি হচ্ছে, মঙ্গল গ্রহ। পৃথিবী থেকে মঙ্গলের শুক্র দুরত্ব অবশ্য কম। কিন্তু শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা ৮০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট। সে তুলনায় মঙ্গলের তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয়। জীবনের মৌলিক উপাদান পানির সন্ধানও মিলেছে এতে। আর এসব কারণেই বিজ্ঞানীদের মঙল গ্রহ নিয়ে আগ্রহেরও সীমা নেই। স্বপ্ন দেখছেন, মানব বসতি তৈরী করার।
গতো কয়েক দশক হলো বিজ্ঞানীরা কাজ করে চলছেন বিষয়টি নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এজন্য এখন পর্যন্ত চারটি সার্ভে রোবট পাঠিয়ে মঙ্গলের মাটি এবং পরিবেশ পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। এধরণের রোবটকে বলা হয়, রোভার।

সর্বশেষ মঙ্গলের উদ্দেশ্য পাঠানো রোভারটি হচ্ছে, দ্য পার্সিভিরান্স। এটিও নাসার একটি প্রকল্প। গতো বছর ৩০ শে জুলাই রোভারটি পৃথিবী থেকে মঙ্গলের পথে রওনা হয়েছিলো। মহাশূন্যের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আগামী ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২১ এ সেটি মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলে মানব অভিযান পরিচালনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এর আবহাওয়া। বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ নেই বললেই চলে। মাত্র ০.১৭৪%। শতকরা ৯৫ ভাগ কার্বনডাই অক্সাইড, ৩ ভাগ নাইট্রোজেন, ১ ভাগ আর্গন। রোভার দ্য পার্সিভিরান্স মূলত, মঙ্গলের কার্বনডাই অক্সাইডকে ভেঙে অক্সিজেন এবং কার্বন মনো অক্সাইড তৈরী করা কতোটা কার্যকর হবে সেটা যাচাই করবে।
পাশাপাশি মঙ্গলে থাকা জমাট বরফ থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণ করে অক্সিজেন তৈরী বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখবে। এতে বিজ্ঞানীরা আশানুরূপ ফলাফল পেলে একাজের জন্য আরও বড় রোভার প্রেরণ করবেন। যেটা ভবিষ্যতে মঙ্গলে মানব অভিযানের পথ সুগম করে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রোভার দ্য পার্সিভিরান্স সম্পর্কে বিস্তারিত এবং পুরো অভিযান সম্পর্কিত বিশদ তথ্য এবং ঘটনার বিবরণ জানা যাবে নাসার অফিশিয়াল এই ওয়েবপেজটি অথবা নিচের বাটনটি থেকে। সাথে লাইভ নানা তথ্যও দেখা যাবে এখান থেকে।
রোভারটি অবতরণের পুরো প্রক্রিয়াটি সাধারণ মানুষের জন্য লাইভ দেখার ব্যবস্থা করেছে নাসা। নিচের ভিডিওতে অথবা ইউটিউবের মাধ্যমে চাইলে আপনিও সেটা দেখতে পারেন। বাংলাদেশ সময় আগামী পরশু অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ০১ টা ১৫ মিনিটে রোভারটি মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করবে। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা থেকেই লাইভটি সম্প্রচারিত হওয়া শুরু হবে।
সরাসরি মঙ্গলে অবরতণের এমন দৃশ্য দেখা যে কোন মহাকাশপ্রেমী মানুষের জন্য একটিই অসাধারণ অভিজ্ঞতার বিষয়। বাসার ছোট ছেলেমেয়ে নিয়েও এটি দেখতে পারেন। এতে করে তারা মহাকাশ তথা বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস। নাসার এই মঙ্গল অভিযান সম্পর্কে আপনার মতামত এবং জিজ্ঞাসা জানাতে পারেন আমাদের কমেন্ট বক্সে।