কম্পিউটার এবং আমাদের মধ্য যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে কীবোর্ড। কম্পিউটারের যে কোন কাজ সবচেয়ে কম সময়ে করতে চাইলে টাইপিং স্পিড বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। অথচ প্রয়োজনীয় এই দক্ষতাটিকে আমরা সবচেয়ে বেশি অবহেলা করে থাকি।
আপনি যতোটা দ্রুত চিন্তা করতে পারেন, তার চেয়ে আপনার টাইপিং স্পীড কম হলে ধরে নিবেন; আপনি কম্পিউটার এবং আপনার সম্পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছেন না। টাইপিং স্পীড চিন্তার মতো দ্রুত হওয়ার পাশাপাশি নির্ভুল হওয়াও সমানভাবে জরুরী।
টাইপিং স্পীড বাড়ানো কিন্তু একদমই কঠিন কোন বিষয় নয়। প্রয়োজন শুধু ইচ্ছাশক্তি আর প্র্যাকটিস। বুঝতেই পারছে আজকের লেখার কী নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আপনি যদি ইতিমধ্য আপনার টাইপিং স্পীড কতো তা জেনে থাকেন এবং সেটা আরও দ্রুত করতে চান তাহলে এই লেখার শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।
টাইপিং স্পিড বাড়ানো যাবে যে ভাবে
কেন টাইপিং স্পিড বাড়াবেন?
বর্তমান সময়ে যে কোনই কাজের কথাই বলুন, তার সাথে কম্পিউটারে যোগসূত্র আছে। তাই, ডিজিটাল ডিভাইস বা কম্পিউটার ব্যবহার করতে জানা খুবই আবশ্যিক একটা দক্ষতা এখন। আর কম্পিউটারে দক্ষ হওয়ার একটা ছোট কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড হচ্ছে টাইপিং স্পীড।
আগেই বলেছি, আপনি যদি আপনার চিন্তার সাথে তাল মিলিয়ে সমান গতিতে টাইপ করতে পারেন তবেই, ধরে নেওয়া যাবে আপনি কম্পিউটারের সক্ষমতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছেন।

দ্রুত টাইপিং আপনাকে চাকরি পেতে সাহায্য করবে ব্যাপারটা এমন নয়। কিন্তু দ্রুত টাইপিং দক্ষতার কারণে আপনি অন্যদের থেকে একধাপ এগিয়ে থাকবেন এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। কারণ, দ্রুত টাইপিং করতে পারলে কম্পিউটারের বেশিরভাগ কাজই আপনি দ্রুত করে ফেলতে পারবেন।
সেটা সার্বিকভাবে আপনার প্রোডাক্টিভিটি যেমন বাড়িয়ে দিবে। তেমনি কাজের বাইরে নিজের জন্যও অনেক সময় বের করার সুযোগ তৈরী করে দিবে।
কোন পর্যায়ে আছে আপনার টাইপিং স্পিড?
টাইপিং স্পিড বাড়াতে চাইলে শুরুতেই আমাদের টাইপিং স্পিড কতো সেটা জানা থাকা প্রয়োজন। তাহলে আমরা বুঝতে পারবো ঠিক কীভাবে আরও দ্রুত করার জন্য প্র্যাকটিস করতে হবে। তাই, আমরা এবার টাইপিং স্পিড এর পাঁচটি ধাপ দেখবো।
আর হ্যাঁ, আমরা এই লেখায় ইংরেজি টাইপিং স্পীড নিয়েই আলোচনা করবো। ইংরেজি টাইপিং স্পিড যথেষ্ঠ দ্রুত করতে পারলে, বাংলা লেখার স্পীড বাড়ানোও কঠিন কিছু হয় না। বাংলা টাইপিং স্পীড বাড়ানো নিয়ে আপনারা যদি আলাদা আরেকটা লেখা চান তবে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।
টাইপিং স্পীড যখন ২০-৫০ WPM
পৃথিবীজুড়ে ইংরেজি ভাষায় মানুষের গড় টাইপিং স্পীড ৪০ WPM. বাংলায় এই গড় স্পিড বা সেরা স্পীড কতো সে সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য আমরা পাই নি। তবে, আপনি যদি অভ্র ফোনেটিক লেআউটে অভ্যাস্ত হন, তাহলে ইংরেজি টাইপিং স্পীডের কাছাকাছিই হবে আপনার বাংলা টাইপিং স্পিড।
আপনার টাইপিং স্পীড ২০ থেকে ৫০ WPM এর মাঝামাঝি হওয়ার অর্থ, টাইপ করার সময় আপনাকে কীবোর্ডের দিকে তাকাতে হয়। সবগুলো কী এর অবস্থান এখনও আপনার আঙুলের কাছে মুখস্থ হয় নি।
এই পর্যায়ে স্পীড বাড়াতে যা করবেনঃ
যেহেতু আপনাকে এখনও কীবোর্ডের দিকে তাকাতে হয় টাইপ করার সময়, তাই এখান থেকে আপনার স্পীড বাড়ানোর জন্য শুধুমাত্র একটা দিকেই নজর দিতে হবে। তা হল, কীবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে লেখার প্রাকটিস করা।
প্রথম প্রথম বেশ সমস্যা হবে। ভুল হবে প্রচুর। কিন্তু আঙুলগুলোর কীবোর্ডের প্রতিটা বোতামের অবস্থান মুখস্ত হয়ে গেলে খুব সহজেই WPM ৫০ পার করে ফেলতে পারবেন। তাই ধৈর্য ধরে প্রাকটিস করতে থাকুন। প্রাকটিস এবং আপনার একাগ্রতার উপর নির্ভর করবে কতো সময় লাগবে আপনার এই স্তর পার হতে।
টাইপিং স্পীড যখন ৫১-৭০ WPM
এই পর্যায়ে আপনার টাইপিং স্পিড থাকলে আপনাকে পেশাদার টাইপিস্ট বলা যাবে। কারণ, আপনাকে টাইপ করতে এখন আর কীবোর্ডের দিকে তাকানোর প্রয়োজন পড়ে না। প্রতি সেকেন্ডে আপনি প্রায় একটা করে শব্দ টাইপ করতে পারেন। প্রফেশনাল টাইপিস্টদের গড় স্পীড থাকে এই রেঞ্জে।
এই পর্যায়ে স্পীড বাড়াতে যা করবেনঃ
এবার আপনাকে স্পিডের চেয়ে বেশি নজর দিতে হবে নির্ভুল হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে। যা টাইপ করছেন তাঁর মধ্য যেন ভুল না থাকে। প্রতিটা শব্দ নির্ভুলভাবে টাইপ করার জন্য প্রাকটিস করুন। নির্ভুলতা আয়ত্তে আসার সাথে সাথে স্পীডও বেড়ে যাবে।
নির্ভুলভাবে শব্দ টাইপ করার জন্য, একবারে একটি বাক্য চিন্তা না করে শব্দ এবং এর বানানটি মাথায় রেখে দিন। প্রতিটা শব্দ টাইপ করার সময় মনোযোগটা ঐ শব্দতেই রাখুন। মনোযোগ পরিষ্কার রাখার জন্য প্রতিটা শব্দ টাইপ করার পর এক সেকেন্ডের একটি বিরতি নিয়ে আবার অন্য শব্দ টাইপ করুন।
টাইপিং স্পীড যখন ৭১-৯০ WPM
আপনি যদি ৭০WPM এর উপরে ইংরেজি টাইপ করতে পারেন তাহলে আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন। আপনি পেশাদার টাইপিস্ট এর পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে এসেছেন। এখান থেকে উন্নতি করার জন্য কীভাবে আলাদাভাবে পড়া এবং চিন্তা করা যায় সেটা আপনাকে বুঝতে হবে।
সাধারণত আমরা একটি শব্দ লেখার পর সেটা পড়ি, এবং তারপর নতুন শব্দের জন্য চিন্তা করি। টাইপিং স্পিড ৯০ এর বেশি বা ১০০ এর কাছাকাছি যাদের, তারা সাধারনত শব্দ লেখার পর সেটা পড়েন না, সরাসরি নতুন শব্দটি চিন্তা করে টাইপ করা শুরু করেন।
এই পর্যায়ে স্পীড বাড়াতে যা করবেনঃ
কী শব্দ টাইপ করলেন, সেটা না পড়ে কি শব্দ টাইপ করবেন সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে এই পর্যায়ে আপনার স্পীড বাড়ানোর জন্য। এজন্য প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস এবং স্ব-প্রণোদনা। কারণ, ব্রেইন বারবারই চাইবে কী লেখা হলো সেটার নির্ভুলতা যাচাই করতে। তাই, এই পর্যায়ে প্রাকটিস করতে হবে আরও বেশি একাগ্রতার সাথে।
টাইপিং স্পীড যখন ৯১-১১০ WPM
এই পর্যায়ে স্পীড বাড়াতে যা করবেনঃ
টাইপিং স্পীড যখন ১১১+ WPM
এই পর্যায়ে স্পীড বাড়াতে যা করবেনঃ
টাইপিং এর জন্য কীবোর্ডে হাত কীভাবে রাখবেন?
প্র্যাকটিস করার কিছু ওয়েবসাইট
টাইপিং স্পিড বাড়ানোর উপায় নিয়ে এই ছিলো আমাদের আজকের আলোচনা। কেমন লাগলো আপনার কাছে? আপনার বর্তমান টাইপিং স্পিড কতো? তা জানিয়ে দিন কমেন্ট বক্সে। পাশাপাশি আপনার যেকোন মূল্যবান মতামত জানাতে পারেন কমেন্টের মাধ্যমে। লেখাটি আপনার ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে নিতে ভুলবেন না।
Pingback: কম্পিউটারে টাইপিং স্পিড দ্রুত কিভাবে করবেন ? - Tech Topic Cobangla