পৃথিবী বৈচিত্র্যময় সেটা ইন্টারনেটের এই জগতে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারা যায়। না না ধরণের তথ্য আমরা অনলাইনের নানা জায়গায় দেখি। তার মধ্য থেকেই আজব ধরণের আজগুবি ১০টি ফ্যাক্ট নিয়ে আজকের লেখা।

শুরুতেই বলে রাখি এই ফ্যাক্টগুলো কেউই সিরিয়াসভাবে নিবেন না। আমরা নিজেরাও নিই নি। তবে কেন এই লেখা? তার উত্তর আছে লেখার শেষ অংশে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজগুবি দশটি ফ্যাক্ট দেখে নিই ঝটপট।

আজগুবি ১০টি ফ্যাক্ট

পৃথিবীর প্রথম অ্যালার্ম ঘরিটি শুধুমাত্র ভোর চারটায় অ্যালার্ম দিত

১৭৮৭ সালে লেভি হাটকিনস অ্যালার্ম ঘড়ি তৈরী করেন। সকালে কাজে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠতে প্রায়ই বেশ দেরী হয়ে যেত তার। এ সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্য এমনভাবে ঘড়ি তৈরী করেন নিজের জন্য, যেটা প্রতিদিন ঠিক চারটায় অ্যালার্ম দিয়ে তাকে জাগিয়ে দিবে।

বলা বাহুল্য, এই ঘড়িটি শুধুমাত্র চারটাতেই অ্যালার্ম দিতে পারত। অ্যালার্মের সময় পরিবর্তন করার কোন সুযোগ ছিলো না। পরবর্তী প্রায় একশোবছর এরকম ফিক্সড টাইমে অ্যালার্ম দেওয়া ঘড়ির প্রচলন ছিলো। যার যে সময় প্রয়োজন সে অর্ডার দিয়ে সেই সময়ে অ্যালার্ম দেওয়া ঘড়ি বানিয়ে নিতেন। প্রায় একশ বছর পর ইচ্ছামত অ্যালার্মের সময় পরিবর্তন করা যায় এমন ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়।

আরও পড়তে পারেনঃ ইন্টারনেট নিয়ে ১০টি অবাক তথ্য, আপনার জানা আছে কি?

জীবদ্দশায় একজন মানুষ প্রায় ৫০ হাজার লিটার লালা নিঃসরণ করে

গড়পড়তা একজন মানুষ সারাদিনে মোটামুটি ১ থেকে দুই লিটার লালা নিঃসরণ করে থাকে। সবচেয়ে বেশি লালা নিসঃসরণ হয় খাবার সময়। আসলে যথেষ্ট পরিমাণ লালা নিঃসরিত না হলে আমাদের খাবার খাওয়াটাই প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত।

সেই হিসেবে একজন মানুষ যদি ৭০ বছর বাঁচে, তবে সে মোটামুটি ৫০ হাজার লিটার লালা নিঃসরণ করবে। এই পরিমাণ লালা জমাতে পারলে তা দিয়ে অনায়েসেই ভরিয়ে ফেলা দুইটা পুরোদস্তুর সুইমিং পুল!

আজগুবি ১০টি ফ্যাক্ট

মৌমাছি মানুষের চেহারা শনাক্ত করতে পারে

বিশাল সাইজের প্রাণিরা যেখানে কোনকিছু মনে রাখার ব্যাপারে তাল হারিয়ে ফেলে, সেখানে মৌমাছি মনে রাখতে পারে মানুষের চেহারাও। স্মার্ট এই পতঙ্গটি কোন চেহারাকে দেখতে প্রায় পাঁচ হাজার আলাদা আলাদা ছবির সমন্বয় হিসেবে। অনেকটা ডিজিটাল স্ক্রিনের পিক্সেলের মতো করে।

আইফেল টাওয়ারের চূড়ায় উঠতে ভাঙতে হবে ১৭১০ টি সিঁড়ি

গ্রায় একশো আটতলার সমান লম্বা আইফেল টাওয়ার, মানব নির্মিত আশ্চর্যতম একটি স্থাপনা। আপনি যদি একদম এর পাদদেশ থেকে চূড়ায় উঠতে চান, তবে ১৭১০টি সিঁড়ি ভাঙতে হবে।

যদিও, প্রথম প্লাটফরমের পর থেকে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার কোন সুযোগ পর্যটকদের জন্য নেই। তাই, আপনি চাইলেও এতোগুলো সিঁড়ি ভাঙতে পারবেন না। এখান থেকে উপরে যেতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে লিফট ব্যবহার করতে হবে।

কিছু পাখি ও পোকামকড় পৃথিবীকে দেখে স্লো মোশনে

এর কারণ হচ্ছে, তাদের ব্রেন সবকিছু খুব দ্রুত গতিতে প্রসেসিং করে। তাদের মুভমেন্টও বেশ দ্রুত হয় অন্যান্য প্রাণির চেয়ে। যার ফলে, পুরো পৃথিবীটাই কিছুটা ধীর মনে হয় তাদের কাছে। বড় অনেক প্রাণির ক্ষেত্রে আবার উল্টো ঘটনা ঘটে। তাদের মস্তিষ্ক খুব কিছুটা ধীরে কাজ করায় পৃথিবীটা বেশ দ্রুত গতির মনে হয়!

ফ্রিজে বালিশ রাখার জন্যও রয়েছে দিবস

মানুষের কতো আজগুবি খেয়ালের হয়ত শেষ নেই। এরকম কোন একটি অহেতুক খেয়াল থেকে উৎপত্তি এই দিবসের। আমেরিকা এবং ইউরোপে বিংশ শতকের শুরুর দিক থেকে ফ্রীজে বালিশ রাখা দিবসের সূচনা। কীভাবে এই দিবসের শুরুটা হয়েছিলো তা আমাদের জানা নেই।

আরও পড়োতে পারেনঃ স্মার্টফোন সম্পর্কিত ১১টি অবাক করা তথ্য, আপনি জানেন কী?

সিংহের গর্জন শোনা যায় ৫ মাইল দূর থেকে

আরও একটূ পরিষ্কার করে বললে, সিংহ তার গর্জনের মাধ্যমে ১১৪ ডেসিবল পর্যন্ত তীব্র শব্দ তৈরী করে। যার ফলে নিশব্দ পরিবেশে সেটা প্রায় পাঁচ মাইল দূর থেকেও শোনা যায়।

অক্টোপাস জন্মের সময় পোকামাকড়ের সমান ক্ষুদ্রাকৃতির থাকে

আটটি পা বা শুড় যেটা বলা হোক না কেন, অক্টোপাস দেখতে যে কোন মানুষের কাছেই ভীতিকর লাগে। পানির নিচে অক্টোপাসকে এড়িয়ে চলে অনেক বড় বড় প্রাণিও। তবে, অক্টোপাস কিন্তু জন্মের সময় এতোটা বিকট দর্শন থাকে না। এমনকি সাইজেও হয় পিপড়ার সমান। বলা বাহুল্য, একটি মা অক্টোপাস একবারে প্রায় দশ হাজার ডিম দিয়ে থাকে।

গমের তৈরী বাসনকোসন

তাইওয়ানের একটি প্রতিষ্ঠান গম থেকে তৈরী করে, প্লেট চামচ বা গামলার মতো বাসনকোসন। আপনি চাইলে খাবারের সাথে সাথে তাই খেয়ে ফেলতে পারবেন প্লেটও। পরিবেশ বান্ধব তৈজসপত্র তৈরীর লক্ষ্যেই এমন অদ্ভুত প্রচেষ্টা তা বলাই বাহুল্য।

সারাজীবনে একজন মানুষ ৫ পাঁচ পৃথিবীর চক্কর দেওয়ার সমান রাস্তা হেঁটে ফেলে।

গড়পড়তা ৮০ বছর আয়ুর একজন মানুষ সাধারণভাবে তার জীবদ্দশায় প্রায় ১১০০০০ মাইল রাস্তা হাটে। যেটা হিসেব করলে দেখা যায় পুরো পৃথিবী পাঁচ বার চক্কর দেওয়ার সমান রাস্তা।

আজগুবি ১০টি ফ্যাক্ট নিয়ে এই ছিলো আজকের লেখা। এসবের কোন তথ্যরই সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত নই আমরা। পাঠকের মনে কৌতুহল জাগানোর উদ্দেশ্যই আমাদের এই লেখা প্রকাশ করা। আমরা চাই, পাঠক অদ্ভুত সব তথ্য দেখা মাত্র বিশ্বাস না করে নিজ দায়িত্বে অনুসন্ধান করার চেষ্টা করবে। কমেন্ট বক্সে এসব তথ্যের গ্রহণযোগ্যতা জানাবে আমাদের। তাহলেই এই লেখার উদ্দেশ্য পূরণ হবে।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2023 © KendroBangla | All Rights Reserved