সম্প্রতি মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১১ এর বেটা ভার্সন ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে যে কোন উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীকে। যার অর্থ বেটা ভার্সনের বিভিন্ন বাগ থাকার সম্ভাবনা নিয়ে যদি আপনার সমস্যা না থাকে; এবং আপনি যদি উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারী হন; তাহলে আপনি চাইলে উইন্ডোজ ১১ বেটা ভার্সন ডাউনলোড করতে পারবেন।
তবে, এর সাথে আরও একটি জিনিস দেখে নিতে হবে, তা হচ্ছে আপনার কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১১ চলবে কিনা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি নিচের দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব সহজেই উইন্ডোজ ১১ বেটা ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
ডাউনলোড করার পর স্বয়ংক্রীয়ভাবে আপনার কম্পিউটার উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল হয়ে যাবে। একটা রিস্টার্টের মাধ্যমেই আপনি উপভোগ করতে পারবেন নতুন এই অপারেটিং সিস্টেমের অভিজ্ঞতা। উইন্ডোজ ১১ ইনস্টলের পরে সেটা ভালো না লাগলে আবার উইন্ডোজ ১০-এ ফেরত আসার ব্যবস্থাও আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা থাকলে একদম শেষে।
উইন্ডোজ ১১ বেটা ভার্সন ডাউনলোড করার উপায়

এজন্য সর্বপ্রথম আপনাকে উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগ্রামে অংশ নিতে হবে। উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগাম হচ্ছে, মাইক্রোসফট এর একটি বিশাল ইউজার কমিউনিটি। যাদেরকে মাইক্রোসফট তাদের যে কোন আপডেট বা সফটওয়্যার (প্রিভিউ বা বেটা ভার্সন) সবার আগে ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
ইনসাইডার প্রোগ্রামে থাকা ব্যবহারকারীরা এসব প্রোগ্রাম সম্পর্কে তাদের ফিডব্যাক সরাসরি মাইক্রোসফটের ইঞ্জিনিয়ারদের জানাতে পারেন। এবং মাইক্রোসফট সে অনুযায়ী তাদের সফটওয়্যারকে বাগ ফ্রী এবং আরও স্ট্যাবল করে সর্বসাধারণের মাঝে মুক্ত করে।
ইনসাইডার প্রোগ্রামে থাকা ব্যবহারকারীদের জন্য তিনটি চ্যানেল থেকে যে কোন একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। যেখানে প্রতিটি চ্যানেল ব্যবহারকারীকে ডিভাইস এবং পারফর্মেন্স অনুযায়ী আলাদা আলাদা অভিজ্ঞতা দেয়।
এর মধ্য ডেভ চ্যানেল হচ্ছে, সফটওয়্যার ডেভেলপার বা প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান আছে এমন ব্যবহারকারীদের জন্য রিকমান্ড করা হয়ে থাকে। কারণ, এটাতে অনেক বেশি পরিমাণে বাগ থাকে। একটি স্ট্যাবল ভার্সন তৈরীর ক্ষেত্রে ডেভ চ্যালেন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অন্যদিকে বেটা চ্যালেন ডেভ চ্যানেলের চেয়ে তুলনামূলক কম বাগ থাকে। সাধারণ ইউজারের এটা ব্যবহার করতে তাই খুব বেশি অসুবিধা হয় না। এর পরের অপশনটিতে থাকে রিলিজ প্রিভিউ চ্যানেল।
যেটা উইন্ডোজের স্ট্যাবল ভার্সন রিলিজ দেওয়ার কিছুদিন আগে ব্যবহার করা যায়। স্ট্যাবল বা ফাইনাল ভার্সনটি কেমন হবে সেটা প্রায় পুরোটাই বোঝা যায় এখানে। বেটা চ্যানেল ব্যবহারকারীরা প্রিভিউ চ্যানেলের উইন্ডোজ ব্যবহার করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
ডাউনলোড করবেন যেভাবে
উইন্ডোজ ১১ বেটা ভার্সন ডাউনলোড এবং ইনস্টল করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন,
- ইনসাইডার প্রোগ্রামে সাইনআপ করুন
এজন্য উইন্ডোজ ১০ এর Settings থেকে Update & Security অপশনে যান।
এরপর বামপাশের সাইডবার থেকে Windows Insider Program অপশনে যান।
এখান থেকে Get started বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগ্রামে জয়েন করার রেজিস্ট্রার বাটনে ক্লিক করে আপনার মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টটি সাইন ইন করে নিন।
তাহলেই আপনি Insider Program এ যুক্ত হয়ে যাবেন। - বেটা চ্যানেল সিলেক্ট করুন
এরপর Pick your Insider settings থেকে Beta Channel (Recommended) সিলেক্ট করে Confirm বাটনে ক্লিক করুন।
- প্রাইভেসি স্টেটমেন্ট এবং এগ্রিমেন্ট
এরপর আপনাকে ইনসাইডার প্রোগ্রামের প্রাইভেসি স্টেটমেন্ট এবং এগ্রিমেন্ট দেখানো হবে। আপনি চাইলে সেগুলো পড়ে নিতে পারেন। এরপর Confirm বাটনে ক্লিক করুন।
- রিস্টার্ট দিন
ব্যস হয়ে গেছে। আপনি এখন উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগ্রামের একজন সদেস্য। Restart Now বাটনে ক্লিক করে করলেই উইন্ডো ১০ এর বেটা ভার্সন ডাউনলোড হওয়া শুরু হবে।
উইন্ডোজ ১০-এ ফেরত আসার উপায়
একবার আপনি উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগ্রামে যুক্ত হলে পরবর্তীতে যে কোন বিল্ড বা আপডেট আপনি স্বয়ংক্রীয়ভাবেই পেতে থাকবেন। এতে করে যেমন নিত্যনতুন ফিচার মিস করবেন না, তেমনি বাগের সমস্যাও লেগে থাকতে পারে পিসিতে।
এটা যদি আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়; বা উইন্ডোজ ১১ যদি আপনার এক্সপেকটেশন পুরা করতে না পারে, তাহলে আপনি চাইলে আবার উইন্ডোজ ১০ এ ফিরে আসতে পারবেন।
- এজন্য Setting থেকে প্রথমে Update & Security অপশনে যান।
- এরপর এখান থেকে Windows Insider Program এ ক্লিক করুন।
- এরপর Stop getting preview builds এ ক্লিক করুন। তারপর Leave the Insider Program এ ক্লিক করুন।

ব্যাস, আপনি ইনসাইডার প্রোগ্রাম থেকে বের হয়ে যাবেন। এবং একটা রিস্টার্টের পর আবার উইন্ডোজ ১০ এ ফেরত আসবেন।
কম্পিউটার যদি আপনি কাজের জন্য ব্যবহার করে থাকেন এবং খুব বেশি প্রযুক্তি নিয়ে জানা শোনা না থাকে; তাহলে আমাদের পরামর্শ থাকবে এই মুহূর্তে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার না করার জন্য। কারণ, উইন্ডোজ ১১ বেটা ভার্সন ডাউনলোড প্রক্রিয়া বেশ সহজ হলেও, ইনস্টল করার সময় বা ইনস্টলের পরে অসুবিধায় পড়তে পারেন।
সেক্ষেত্রে খামাকা একটা কারণে আপনার কাজের ধারাটা ব্যহত হবে। তাই, কিছুদিন ধৈর্য ধরে উইন্ডোজ ১১ এর স্ট্যাবল ভার্সনের জন্য অপেক্ষা করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আর হ্যাঁ, যদি সবকিছুর পরেও উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করতে চান, তাহলে ইনস্টলের আগে আপনার প্রয়োজনীয় ফাইলের ব্যাকআপ এবং একটি পেনড্রাইভে উইন্ডোজ ১০ বুটেবল করে রাখার পরামর্শ থাকলো। এতে করে অনাকাঙ্খিত ত্রুটিতে আপনার কম্পিউটার ব্রিক হয়ে গেলেও আপনি সহজেই আবার আগের অবস্থায় ফেরত যেতে পারবেন।