অনেকেই অভিযোগ করেন স্মার্টফোন তাদের প্রোডাক্টিভিটি বা কাজের গতি কমিয়ে দিচ্ছে। করে তুলছে অলস ও অমনোযোগী। অবশ্য, এটার পিছনের স্মার্টফোন এবং ব্যবহারকারীর মধ্য, কার ভূমিকা কতোটুকু সেটাও একটা প্রশ্ন। তবে, স্মার্টফোনের সঠিক ব্যাবহার আপনার প্রোডাক্টিভিটি কমানোর বদলে বরং আরও বাড়িয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে, সেটা নিয়েও কোন সন্দেহ নেই। আমরা আজকের এই লেখায় জানবো স্মার্টফোনের ৫টি স্মার্ট ব্যবহার সম্পর্কে।

স্মার্টফোনের ৫টি স্মার্ট ব্যবহার মূলত আপনাকে সময়ানুবর্তী, আপনার কাজের গতি পর্যবেক্ষণ সহ কাজ সহজ করার ব্যাপারে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ। তবে, এই ব্যাবহারগুলো করার পূর্বে ফোনের অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ করার পরামর্শ রইলো। অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে নোটিফিকেশন বন্ধ করার উপায় জানা না থাকলে দেখে নিতে পারেন এখান থেকে।

স্মার্টফোনের ৫টি স্মার্ট ব্যবহার করে বাড়িয়ে নিন নিজের প্রোডাক্টিভিটি

স্মার্টফোনের ৫টি স্মার্ট ব্যবহার

সময় ব্যবস্থাপনা বা টাইম ম্যানেজমেন্ট করুন স্মার্টফোনের সাহায্যে

প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে সঠিকভাবে সময়কে ব্যবহার করা। আপনি যদি আপনার কাজের সময়, অবসর সময় বা পরিবার দেওয়া সময়ের মধ্য সঠিকভাবে সমন্বয় করতে পারেন, তাহলে প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানো আপনার জন্য কোন সমস্যাই হবে না।

টাইম ম্যানেজমেন্ট

স্মার্টফোন আপনার হয়ে কখন বা কবে কী কী করতে হবে সেটা মনে করিয়ে দিয়ে সাহায্য করতে পারে। একই সাথে কাজের সময় ট্র্যাক করার জন্যও একে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার কাজ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট অ্যাপে আপনার দিনের রুটিনটা তৈরী করে নেওয়া।

এজন্য একটি চমৎকার অ্যাপ হচ্ছে, TimeTune. এর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই যতোদিনের খুশি ততদিনের রুটিন খুব সহজেই যোগ করে দিতে পারবেন। দারুণ সব ফিচারে ভরপুর অ্যাপটি ব্যবহার করাও বেশ সহজ

কী করতে হবে তার তালিকা তৈরী রাখুন স্মার্টফোনে

প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পরের দিন ঠিক কী কী কাজ করতে হবে তার যদি একটা তালিকা তৈরী করে রাখেন; তাহলে সেই কাজগুলো ভুলে যাওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। আর সেটা যদি স্মার্টফোনে করে রাখেন তাহলে অবসরে একটু চোখ বুলিয়ে নিলে আর ভুলে যাওয়ার সম্ভানা থাকে না। সার্বিক প্রোডাক্টিভিটি এভাবেই টু-ডু লিস্টের মাধ্যমে বৃদ্ধি করে ফেলা যায়।

টু-ডু লিস্ট

To-do লিস্টের জন্য করার জন্য প্রচুর অ্যাপ পেয়ে যাবেন প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরে। সবগুলো অ্যাপই ভালো ভালো ফিচার অফার করে। টু-ডু লিস্ট তৈরীর জন্য রয়েছে গুগল বা মাইক্রোসফটের মতো টেক জায়ান্টদেরও মোবাইল অ্যাপ। আপনি চাইলে যে কোন একটি টু-ডু লিস্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।

আমাদের কাছে Focus অ্যাপটি বেশ ভালো লেগেছে। স্মার্টফোনের পাশাপাশি কম্পিউটারেও এটি ব্যবহার করতে পারবেন ব্রাউজার এক্সটেশন হিসেবে। এছাড়া উইন্ডোজ স্টোর থেকেও উইন্ডোজ কম্পিউটারে অ্যাপটি ইনস্টল করে নিতে পারবেন

প্রচুর ফিচারের কারণে অ্যাপটি অনেকের কাছেই কিছুটা জটিল মনে হতে পারে। তাছাড়া, টু-ডু লিস্ট ধরণের অ্যাপগুলো খুব সিম্পল হলে কাজে বেশি সুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে গুগল টাস্ক বা মাইক্রোসফটের টু-ডু লিস্ট অ্যাপ ব্যবহার করার পরামর্শ থাকবে।

সুযোগ পেলেই বই পড়ুন যে কোন জায়গায়

বই পড়া এমন একটি অভ্যাস যেখানে আপনি কখনও ঠকবেন না। বরং লাভবান হবেন। পৃথিবীর সব সফল মানুষই বই পড়াটাকে প্রচন্ড গুরুত্ব দিয়েছেন। এবং নিজেরা সেই অভ্যাসটাকে রপ্ত করেছেন। হয়েছে স্মরণীয়। আপনার যদি বইপড়ার অভ্যাস থাকে তাহলে তো খুবই ভালো। আর না থাকলেও অভ্যাসটি করে ফেলুন। এটা আপনাকে সবজায়গায় এগিয়ে রাখবে।

বই পড়ার অভ্যাস করুন

বইপড়ার জন্য স্মার্টফোনকে দারুণভাবে কাজে লাগাতে পারেন। প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হবে হয়ত। কিন্তু একবার স্মার্টফোনে বই পড়ার মজা পেয়ে গেলে আপনি যে কোন জায়গায় যে কোন অবস্থায় পৃথিবীর যে কোন বই পড়তে পারবেন।

বাংলা ইংরেজি বা যে কোন ভাষার বই পড়ার জন্য প্লে স্টোরে প্রচুর পরিমাণ অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। পছন্দ মতো অ্যাপগুলো ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। অনেক অ্যাপই ফ্রীতে বই পড়ার সুবিধা দিয়ে থাকে। আপনি যদি টাকা খরচ করতে না চান, তাহলে এসব অ্যাপ ইনস্টল করে রাখতে পারেন।

বই পড়ার অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় অফলাইনে পড়ার সুবিধা আছে কিনা সেটা দেখে নিবেন। অফলাইনে পড়ার সুবিধা থাকলে ইন্টারনেট কানেকশন না থাকলেও আপনি বই পড়তে পারবেন। এছাড়া ইন্টারনেট থেকে পিডিএফ বই ডাউনলোড করে রেখে সেগুলোও পড়তে পারেন।

যে কোন জায়গায় থেকে অফিসের কাজ করুন

স্মার্টফোনে এখন খুব সহজেই বেশ ভারী ভারী কাজ করা যায়। ফোন আগের চেয়ে অনেকবেশি পাওয়ারফুল হওয়ায়, মাইক্রোসফট অফিসের প্রায় যাবতীয় কাজ এখানে করে ফেলা যায়। ব্যাক্তিগত কিংবা কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে ডকুমেন্ট সম্পাদনার কাজ করার জন্য প্লে স্টোরে রয়েছে বেশকিছু দারুণ অ্যাপ্লিকেশন।

অফিসেরে কাজ করতে পারেন স্মার্টফোনেই

এর মধ্য যেমন গুগল ডক, শীট বা স্লাইডের মতো সহজ এবং কার্যকর অ্যাপ্লিকেশন আছে, তেমনি রয়েছে মাইক্রোসফট অফিসের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন। আপনি চাইলের প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন অফিস অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার ইনস্টল করে রাখতে পারেন স্মার্টফোনে।

এতে করে কোন সময় কম্পিউটারে আপনার হাতের কাছে না থাকলেও প্রয়োজনীয় কাজগুলো সহজেই সেরে নিতে পারবেন। যা আপনার প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে দারুণ ভূমিকা পালন করবে।

রিডিং লিস্ট ব্যবহার করে পড়াটাকে আরও সহজ করে তুলুন

অনলাইনে কোন গুরুত্বপূর্ণ লেখা পড়ছেন। অর্ধেকের মতো পড়া হয়েছে। এরকম সময় জরুরী কাজের আপনাকে পড়া বন্ধ করে দিতে হলো। কাজ শেষে অবসরে আবার লেখাটি পড়তে ইচ্ছে করলো আপনার। কিন্তু কিছুতেই আর খুজে বের করতে পারলেন না। কিংবা ইন্টারনেট কানেকশন না থাকায় খোঁজাটাও সম্ভব হলো না। লেখাটি পড়ার ইচ্ছে সেখানেই মাটি। তার থেকেও বড় কথা, লেখাটি আবার পড়ার জন্য যে সময়টুকু ব্যয় করলেন সেটাও নষ্ট।

পড়ুন সব ডিভাইস থেকে

যাইহোক, কমবেশি অনেকেই এরকম সমস্যায় হয়ত পড়েছেন আপনি। এতে করে পড়ার আগ্রহ এবং মজা দুটোই কমে যায়। এই পরিস্থিতি এড়াতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে স্মার্টফোনের পকেট বা রেইনড্রপের মতো অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে আপনি অনলাইনের যে কোন লেখা সেভ করে রাখতে পারবেন। পরবর্তীতে ইন্টারনেট না থাকলেও সেগুলো পড়া যাবে।

এই অ্যাপ্লিকেশনগুলোর আরেকটা বড় সুবিধা হচ্ছে এগুলো ক্রস প্লাটফরম অ্যাপ্লিকেশন। অর্থাৎ সব ডিভাইস থেকেই অ্যাপগুলো ব্যববার করতে পারবেন। ব্রাউজারের জন্যও রয়েছে এদের এক্সটেনশন।

স্মার্টফোনে এই এরকম রিডিং লিস্ট অ্যাপ ব্যবহার করে কাজের ফাঁকে যে কোন ডিভাইস থেকে সেভ করা গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। এতে করে আপনার জ্ঞানের পরিধি যেমন বাড়বে, তেমনি এগিয়ে থাকবেন সবার থেকে। সর্বোপরি বাড়িয়ে নিতে পারবেন আপনার প্রোডাক্টিভিটি।

স্মার্টফোনের ৫টি স্মার্ট ব্যবহার নিয়ে এই ছিলো আজকের আলোচনা। কেমন লাগলো আপনার কাছে? এর মধ্যকার কোন কাজগুলো আপনি ইতিমধ্যই করেন? কমেন্টে আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে আমাদের উৎসাহিত করবেন। এছাড়া কোন প্রশ্ন থাকলে সেটাও জানিয়ে দিবেন নির্দ্বিধায়। লেখাটি আপনার কাছে ভালো লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করতে ভুলবেন না।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2023 © KendroBangla | All Rights Reserved