কেমন হবে যদি পাসওয়ার্ড ছাড়াই আপনি আপনার অনলাইন একাউন্টগুলোতে প্রবেশ করতে পারেন? ভয় পাবেন না, আপনি আপনার একাউন্টে পাসওয়ার্ড ছাড়া প্রবেশ করতে পারলেও অন্যকেউ সেই সুযোগ পাবে না।

সত্যি বলতে, আপনার একাউন্টের নিরাপত্তা বরং আরও বাড়বে তাতে। সত্যিই, এমনটা হলে বেশ ভালো হয়, তাই না? নিরাপদ এবং ঝামেলাবিহীন হলে কোনকিছুকে আসলে খারাপ বলার সুযোগ নেই।

পাসওয়ার্ড বিহীন ইন্টারনেট

ইন্টারনেটে কোন ব্যাক্তিগত একাউন্ট সুরক্ষিত করার প্রথম উপায় পাসওয়ার্ড বা পিন নাম্বার। কিন্তু দিন দিন প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় সাথে সাথে পাসওয়ার্ডের কার্যকারীতাও কমেছে।

সংখ্যা থেকে অক্ষর, বড় হাতের ছোট হাতের অক্ষর বা নানা রকম বিশেষ ক্যারেক্টার দিয়েও পাসওয়ার্ডকে দূর্ভেদ্য করা যাচ্ছে না। তাই, এর পাশাপাশি নানা টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের মতো অন্যান্য সিকিউরিটি ফিচার ব্যবহার করা হচ্ছে অনেকদিন ধরে। এতোকিছুর পরও হ্যাকাররা কিন্তু বসে নেই। এবার তাই, পাসওয়ার্ডকেই বাদ দেওয়ার চিন্তা করছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। যদিও এর জন্য অনেক দিন হলোই কাজ চলছে।

পাসওয়ার্ড বিহীন ইন্টারনেট

তবে, সম্প্রতি অ্যাপল, গুগল এবং মাইক্রোসফট এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী বছরের মধ্যই পাসওয়ার্ড বিহীন লগ-ইন এর সেবা নিয়ে আসবে তারা। ফলে প্রাথমিকভাবে এই তিন প্রতিষ্ঠানের অনলাইন একাউন্টে লগ ইন করতে আর কোন পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন হবে না।

পাসওয়ার্ডবিহীন ইন্টারনেট ঠিক কেমন হবে?

আসলে পাসওয়ার্ড এর ব্যবহৃত না হলেও, ইউজারকে শনাক্ত করতে স্মার্টফোন ব্যবহার করা হবে। এক্ষেত্রে ফেস আইডি বা ফিঙ্গারপ্রিন্টের মতো ব্যাক্তিগত তথ্য পাসওয়ার্ডের মতো কাজ করবে।

ধরুন, আপনি আপনার স্মার্টফোনে একটি অনলাইন একাউন্টে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেসআইডি যুক্ত করলেন। এবার ঐ একাউন্টের সাথে যুক্ত করা সকল একাউন্টে লগ ইন করতে চাইলে পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আপনার ফোনে একটু নোটিফিকেশন আসবে। যেখানে আপনার ফেস আইডি বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট চাওয়া হবে।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেসআইডি মিলে গেলে তবেই লগ-ইন করা যাবে একাউন্টে। সহজ কথায় পাসওয়ার্ডের জায়গায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেসআইডি ব্যাবহার করা হবে। যেটা চাইলেও দূর থেকে হ্যাক করা সম্ভব হবে না। ভবিষ্যতে ফোনে আরও উন্নত বায়ো ইনফরমেটিক তথ্য নেওয়ার সুবিধা যুক্ত হলে সেগুলোও ব্যাবহার করা হতে পারে। যেমন আইরিস স্ক্যান বা ডিএনএ ম্যাচিং ইত্যাদি।

আরও পড়তে পারেনঃ ক্লাউড কতোটা নিরাপদ আপনার ডাটা সংরক্ষণে?

তো বুঝতেই পারছেন এখনকার পাসওয়ার্ডের চেয়ে নিসঃন্দেহে নিরাপদ হতে যাচ্ছে ব্যবস্থাটি। অ্যাপল, গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানি একসাথে এই সেবাটি চালু করলে আশা করা যায় অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও পাসওয়ার্ড বিহীন ইন্টারেটের জগতে খুব দ্রুতই চলে আসবে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, পাসওয়ার্ড বিহীন সিস্টেমের কারণে আপনাকে জটিল কিংবা ভিন্ন পাসওয়ার্ড আর মনে রাখতে হবে না। পাসওয়ার্ড ম্যানেজার সার্ভিসের জন্যও অতিরিক্ত পয়সা খরচ করতে হবে না।

এখন প্রশ্ন, এই সিস্টেমে কী হ্যাক হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে? উত্তর হচ্ছে, না। হ্যাকাররাও হয়ত এর মাঝে ফাঁক বের করে তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। তবে, সেটা এখনকার চেয়ে অনেক কঠিন হবে সেটা নিশ্চিত।

তাই, আগামীবছর এই সিস্টেমটি চালু হলে অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়বে সেকথা বলাই যায়। সাথে কমবে একাউন্ট লগ-ইন এর ঝামেলা।

যাইহোক, আগামী বছর পাসওয়ার্ড বিহীন ইন্টারনেট চালু হলেও খুব তাড়াতাড়িই পাসওয়ার্ডের ব্যবহার উঠে যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে অপশন রেখেই এই সিস্টেমটি চালু করবে কোম্পানিগুলো। পরে মানুষ এতে অভ্যাস্ত হয়ে গেলে হয়ত সম্পূর্ণভাবেই পাসওয়ার্ড হারিয়ে যাবে।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2023 © KendroBangla | All Rights Reserved